Placeholder canvas
কলকাতা রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

পুজো আসছে, মা আসছে, এই তো সময় উবুন্তু বলার

Updated : 18 Oct, 2023 5:15 PM
AE: Samrat Saha
VO: Indrani Banerjee
Edit: Silpika Chatterjee

শরৎ ছড়িয়ে গেছে বাংলার প্রতি ঘরে। কলকাতার রাস্তায়, পাড়ায় আলো ঝকমক, মফসসলেও সেই আলোর রোশনাই, জেলা সদরেও এখন একই আয়োজন। এই আয়োজন সেই সময়েই যখন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রায় সব কর্তারা জেলে। রাজ্যপালের সঙ্গে তুমুল আকচাআকচি এবং তাঁর গোয়ার্তুমির ফলে একগুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো শিকেয় উঠেছে। কামদুনির অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়েছে বা সাজা কমেছে। রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা পুজোর সময় মদের দোকান খোলা কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন। রাজ্যে এলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, না, হেলিপ্যাডে না উদ্বোধনী মঞ্চে, কোথাও দেখা গেল না চিত্রম বিচিত্রম রাজ্যপালকে। ওনার বোধহয় বিসর্জনের বাজনা বেজেছে। আনিস খান ইনসাফ এখনও পায়নি। চাকরি, আবাস, গরুপাচার, বালি পাচারের পরে নতুন দুর্নীতির খবর এসেছে। রেশনেও দুর্নীতি হয়েছে, কে এক বাকিবুর রহমান, সে তৃণমূলের নেতা, সরকার ঘনিষ্ঠ, সে নাকি কোটি কোটি টাকা গায়েব করে দিয়েছে। কীসের? রেশনের, কারা যায় রেশন দোকানে? অত্যন্ত ছাপোষা নিম্নবিত্ত মানুষ। হ্যাঁ, তাদের টাকা মার গেছে। এবং গ্রামবাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ধানের খেতের শোষক পোকার আক্রমণ, ফসল বাঁচাতে হলে বিঘে পিছু অন্তত ৪০০ টাকা এবং শ্রম। কাশফুলের ছবি তুলছেন? তুলুন। সাদা মেঘ আর শরতের সোনালি রোদ নিয়ে কবিতা গান লিখছেন? লিখুন কিন্তু এগুলো নিয়েও তো ভাবতে হবে। কেন আপনার ঘরের পাশের ঝকঝকে আলো এক্কেবারেই পৌঁছবে না সনাতন মন্ডলের ঘরে, নিতাই জানার ঘরে, শেখ আব্বাসের ঘরে। কেন এই পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি ঢেকেই দেবে রাজ্য সরকারের হাজার প্রকল্প? কেন কেউ ভাববে না সেই সব চাষিদের কথা যা আজ ৪০০ টাকা প্রতি বিঘায় বেশি খরচা করছে। এবং শুধু তাই নয়, এরপরেই আসছে মাজরা পোকার আক্রমণ, তাকে সামলাতে আবার খরচ। তাদের ঘরে শারদোৎসবের আলোর প্রবেশ নিষেধ। আপনি ষষ্ঠীতেই মাথাপিছু ৮৫৯ টাকার খাবার বুক করে ফেসবুকে পোস্ট করছেন, বেশ করেছেন। তসলিমা নাসরিন কোন সুদূরে বসেই এক কেজি প্লাস ইলিশ, বাগদা চিংড়ি, ১৫ কিলো কাতলা মাছের গাদা দিয়ে ফুলকপির ঝোল, আর তার পেটি ভাজার বিবরণ দিয়েই ফেলেছেন। বেশ করেছেন। কিন্তু আজ সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, পুজো আসছে, মা আসছে, এই তো সময় উবুন্তু বলার।

উবুন্তু কথাটা অনেকে জানেন, অনেকে জানেন না। আফ্রিকায় এক ব্রিটিশ সাহেব এক গ্রামে গিয়ে দেখেন বেশ কিছু বাচ্চা ছেলেমেয়ে একসঙ্গে খেলছে। উনি তাদের শারীরিক দক্ষতা ইত্যাদি দেখার জন্য এক ব্যবস্থা করলেন। একঝুড়ি কমলালেবু ছিল তাঁর সঙ্গে। উনি বাচ্চাদের এক দূরত্বে দাঁড় করিয়ে বললেন, যখন বলব তখন ছুটবে, আর যে সবচেয়ে আগে আসবে সে তার ইচ্ছেমতো যত খুশি কমলালেবু নিতে পারবে, কিন্তু শর্ত হাতে করেই নিতে হবে। উনি ভালো করে বোঝানোর পরে বললেন রেডি স্টেডি গো। বাচ্চারা একসঙ্গে হাত ধরে উবুন্তু উবুন্তু বলতে বলতে চলে গেল কমলালেবুর ঝুড়ির কাছে, তারপরে সব্বাই ভাগ করে খেলো। এটাই উবুন্তু, জুলু ভাষার এই শব্দের মানে তুমি আছো, তাই আমি আছি।