Biparjoy-WB Weather | গুজরাত-রাজস্থান বর্ষণে ভিজছে, বঙ্গ ভিজছে ঘামে
কলকাতা, আমেদাবাদ ও রাজস্থান: গুজরাতের স্থলভাগে বৃহস্পতিবার রাতে আছড়ে পড়ার পর শক্তিক্ষয় করে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় শুক্রবার সকালে রাজস্থানে অবস্থান করছে। ফলে রাজস্থানে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে আজ বিকেল পর্যন্ত। রাতেই সৌরাষ্ট্র-কচ্ছ উপকূল পেরিয়ে শক্তি কমিয়েছে বিপর্যয়। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হলেও স্থলভাগের উপরে চলে আসায় তীব্রতা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল রাতেই ফোনে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলেন। ভাবনগরে গবাদি পশুকে জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া থেকে বাঁচাতে বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
ঝড়-বৃষ্টিতে পশ্চিম উপকূল যখন ভাসছে, তখন দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সঙ্গে চরম অস্বস্তিকর আবহাওয়ার হাত থেকে নিষ্কৃতি জোটেনি। আগামী রবিবারের পর দক্ষিণবঙ্গে হাওয়া বদলের সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় ভূমিধস আর নিচু এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা। সব মিলিয়ে রবিবারের আগে বর্ষা দেখা দেবে না দক্ষিণবঙ্গে। বাংলায় বর্ষা প্রবেশ করলেও থমকে আছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। রবিবার থেকে বুধবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে ঢুকবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। আপাতত মালদহের উপরে তার অবস্থান। ১৮ থেকে ২১ জুনের মধ্যে ফের সক্রিয় হতে পারে মৌসুমি বায়ু এমনটাই অনুমান আবহাওয়াবিদদের।
দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের ছয় জেলায় তাপপ্রবাহ চলবে রবিবার পর্যন্ত। বাকি জেলাতেও গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া। চরম অস্বস্তিকর আবহাওয়া। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টি হলেও অস্বস্তি পিছু ছাড়বে না। রবিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। বাকি জেলাতেও চরম অস্বস্তিকর আবহাওয়া গরম বাড়বে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ কোথাও বৃষ্টি হলেও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে রবিবার পর্যন্ত। শনি ও রবিবার অস্বস্তি আরও চরমে উঠবে। বৃষ্টি হলেও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও থাকবে।
শুক্র ও শনিবার বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির বেশি সম্ভাবনা থাকবে মুর্শিদাবাদ নদিয়া এবং বীরভূম পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতে। বাকি জেলাতেও হালকা বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে সোমবার থেকে।
উত্তরবঙ্গে আরও চার-পাঁচ দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গের সব জেলাতে ১৭ জুন, শনিবার পর্যন্ত। আগামী চার-পাঁচ দিন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির কিছু অংশে। পার্বত্য এলাকায় ভারী বৃষ্টিতে ধসের সম্ভাবনা থাকছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। পার্বত্য পাঁচ জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি চলবে।
কলকাতায় দিনভর চরম ভোগান্তি। বেলা যত বাড়বে অস্বস্তি ততটাই বাড়বে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা। বৃষ্টি হলেও অস্বস্তি পিছু ছাড়বে না।বাড়ল দিনরাতের তাপমাত্রা। স্বাভাবিকের তুলনায় চার-পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রা সঙ্গে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি। কলকাতা শহরে আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩১.২ ডিগ্রি। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৩ ডিগ্রি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৫৫ থেকে ৯০ শতাংশ।
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ চলবে ছত্তিশগড়, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ইয়ানাম এলাকায়। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে আগামী কয়েক দিন উত্তরপ্রদেশ, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, বিদর্ভ, তেলেঙ্গনাতে। হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখন্ডে বজ্রবিদ্যুৎ সহ শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা। হালকা বৃষ্টি হবে উত্তর-পশ্চিম ভারতের পার্বত্য এলাকা এবং সমতলের দিল্লি পাঞ্জাব হরিয়ানা চণ্ডীগড়ে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি এমনকী ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে রাজস্থানে। সঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রাজস্থানে সোমবার পর্যন্ত। অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মেঘালয়ে শনিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।