Placeholder canvas
কলকাতা রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Jiban Krishna Saha | নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা

Updated : 18 Apr, 2023 1:16 PM
AE: Samrat Saha
VO: Soumi Ghosh
Edit: Monojit Malakar

বড়ঞা: নিয়োগ দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে (SSC and TET Recruitment Scam) গ্রেফতার বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা (MLA Jiban Krishna Saha)। প্রায় ৬৫ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশির (Search) পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (Central Investigation Agency) গ্রেফতার করে তৃণমূল নেতাকে (TMC Leader)। সিবিআই (Central Bureau of Investigation – CBI) সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা, মূলত এই দুই অভিযোগে প্রাথমিকভাবে তাঁকে সোমবার সকালে গ্রেফতার (Arrest) করা হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এই নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের তিন বিধায়ক গ্রেফতার হলেন এখনও পর্যন্ত। জীবনকৃষ্ণের আগে বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) গ্রেফতার হয়েছেন। দু’জনেই এখন জেলবন্দি, তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। পার্থ চট্রোপাধ্যায় যখন গ্রেফতার হয়েছিলেন, সেই সময় তিনি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী (Education Minister) ছিলেন। গ্রেফতার হওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী পদ গিয়েছে, সমস্ত দলীয় পদ থেকেও পার্থকে সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। 

এদিন ভোর ৫টা ১৭ মিনিট নাগাদ বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক গ্রেফতার করেছে সিবিআই। মুর্শিদাবাদের বরাণ্য (Baranya, Murshidabad) থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। সিবিআই সূত্রে খবর, জীবনকৃষ্ণকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করার পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দল কলকাতা (Kolkata) উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। তাঁকে প্রথমে দুর্গাপুরের সিবিআই ক্যাম্পে (CBI Camp, Durgapur) নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা (Health Check-up) করা হবে। সেখান তৃণমূল বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় নিজাম প্যালেসে (Nizam Palace) আসার কথা সিবিআই টিমের। কঠোর নিরাপত্তার মাঝে তাঁকে বাড়ি থেকে বের করা হয় বলে থবর। 

জীবনকৃষ্ণ যে গ্রেফতার হতে চলেছেন, তা শনিবারই আঁচ করা গিয়েছিল। গত শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বেলা ১২টা থেকে বড়ঞার বিধায়কের বাড়িতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ (Questioning) শুরু করে সিবিআই। সেই সঙ্গে চলতে থাকে তল্লাশি। বিধায়কের বাড়ি এবং তাঁর বাড়ির পাশের খাল, সমস্ত জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩,৪০০ প্রার্থীর তথ্য উদ্ধার করেছে তদন্তকারী সংস্থা। শুক্রবার জীবনকৃষ্ণের বাড়ি থেকে দু’টি নোটপ্যাডও (Notepads) বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের দাবি, বাড়ির একটি ঘরকে নিয়োগ দুর্নীতির আস্তানা বানিয়ে রেখেছিলেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। ওই ঘরটিকে ওয়ার রুম (War Room) বলছেন সিবিআই আদিকারিকরা। সূত্রের খবর, ঘর থেকে একাধিক কম্পিউটার (Computer), বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ (Laptop), তিনটি নোটপ্যাড, হাই-স্পিড ইন্টারনেট সংযোগের ডিভাইস (High-Speed Internet Connection Devices) এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু সফটওয়্যারের (Softwares) খোঁজ মিলেছে। শুধু তাই নয়, একটি সিঁদুর কৌটোর মধ্যে জীবনকৃষ্ণ মোবাইলের মেমরি কার্ড (Memory Card) লুকিয়ে রেখেছিলেন বলেও সিবিআই সূত্রে খবর।

কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ। তাঁর মাধ্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির অনেক টাকার লেনদেন হয়েছে বলে অনুমান সিবিআই আধিকারিকদের। অভিযোগ রয়েছে, ৫ লক্ষ, ৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরিপ্রার্থীদের (Job Candidates) নাম সুপারিশ করতেন বড়ঞার বিধায়ক। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও এনেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, চাকরি দেওয়ার নাম করে ৩০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন বিধায়ক। জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে শুক্রবার বিকেলের দিকে অসুস্থতার অজুহাতে শৌচালয়ে (Toilet) যাওয়ার নাম করে গিয়ে নিজের দু’টি মোবাইল, দু’টি পেনড্রাইভ (Pen Drive) এবং একটি হার্ডডিস্ক (Hard Disk) বাড়ির পিছনের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। প্রায় ৩২ ঘণ্টা তল্লাশির পর একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। 

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে তৃণমূল তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার ক্ষমতায় আসে টিএমসি। তারপর থেকে একটানা তিনবার ক্ষমতায় দখল করলেও, মুর্শিবাদের বড়ঞায় ২০২১ সালে জীবনকৃষ্ণের হাত ধরেই প্রথমবার খাতা খোলে তৃণমূল। প্রায় দু’বছর পর সেই জীবনকৃষ্ণ সিবিআই’য়ের জালে।