জৌলুসহীন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির দুর্গাপুজো
সপ্তমীর সকাল। প্রথা অনুযায়ী নবপত্রিকা স্নান, ঘট ভরা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মিরাটি গ্রামের বাড়ীর দুর্গাপুজোয়। কিন্তু প্রণবহীন দুর্গাপুজোয় মন খারাপ সকলের। গোটা গ্রামে পুজো চারদিন ঘিরে ফেলা হয়েছে ০বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। এই চিত্র সকলেরই ভীষণ চেনা। রীতি মেনেই প্রতি বছরের মতো এবারও দুর্গাপুজো হচ্ছে বীরভূমের মিরাটি গ্রামের মুখোপাধ্যায় বাড়িতে। কিন্তু তাঁকে ছাড়া পুরোটাই অসম্পূর্ন।
২০২০ সালের ৩১ অগাস্ট প্রয়াত হন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক নেতা ও দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। পুজোয় তিনি আর নেই-ভেবেই ব্যাথিত গ্রামের সকলে। রাষ্ট্রপতি হন বা অর্থমন্ত্রী বা বিদেশমন্ত্রী- হাজারও ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতি বছর নিয়ম করে দুর্গাপুজোর সময় গ্রামে আসতেন প্রণববাবু। এলাকাও মুড়ে ফেলা হত নিরাপত্তায়। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার বলয়ে হয়ত নিজেদের গ্রামকেই চিনতে পারতেন না বাসিন্দারা। চারটি দিন একেবারে বাড়িতে থেকে পুজো পরিচালনা করতেন। সেই সঙ্গে পুরোহিতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নবপত্রিকা স্নান–সহ দুর্গাপুজোর সমস্ত রীতিনীতি নিজের হাতে পালন করতেন। জানা যায়,কেবল ১৯৭৮ সালে বন্যার জন্য দুর্গাপুজোয় তিনি আসতে পারেননি মিরাটিতে। সেবার মূর্তি ছাড়াই ঘটপুজো হয়েছিল। তারপর থেকে প্রণববাবু কখনওই পুজো থেকে দূরে সরে থাকেননি। যতই প্রোটোকল থাক, পুজোর চারটে দিন একেবারে গৃহকর্তা হয়েই পুজোয় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। বছরের পর বছর ধরে প্রণববাবু নিজেই করে এসেছেন চণ্ডীপাঠ। কিন্তু সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। সেই গম্ভীর কণ্ঠের চণ্ডীপাঠ শুনতে শুধু আশেপাশের গ্রামের মানুষই নন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রথম সারির ব্যক্তিত্বদের আনাগোনার লাইন পড়ে যেত। সেসব আজ অতীত। মন ভারাক্রান্ত মুখোপাধ্যায় পরিবারসহ গ্রামবাসীদেরও।