সামনে চার মিটারের বিশাল গর্ত, রাস্তা বদলে ফেলল রোভার ‘প্রজ্ঞান’
কলকাতা: ১০০ মিলিমিটার গভীর জ্বালামুখ পেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল ইসরোর (ISRO) চন্দ্রযান ৩-এর (Chandrayaan 3) রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan)। তা দেখে আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের। তাঁরা প্রজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে চলছিলেন। এরপর যে বাধা পড়ল তা অনতিক্রম্য। চার মিটার ব্যাসের এক জ্বালামুখের সামনে পড়ে গতিপথ বদলে ফেলল প্রজ্ঞান।
ইসরোর তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় দু’টি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। একটি ওই গভীর জ্বালামুখের (Crater), আর একটি নতুন রাস্তায় প্রজ্ঞানের চাকার দাগ। ইসরো জানিয়েছে, ২৭ অগাস্ট প্রজ্ঞানের চলার পথে হঠাৎই এই জ্বালামুখ পড়ে। মাত্র তিন মিটার দূরত্বে সে বুঝতে পারে, সামনে বিশাল গর্ত। সঙ্গে সঙ্গে প্রজ্ঞানকে গতিপথ বদলানোর নির্দেশ দেন বিজ্ঞানীরা।
২৩ অগাস্ট চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ করে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে অজানা, অচেনা, বিপদসঙ্কুল দক্ষিণ মেরুর (South Pole) কাছে পৌঁছেছে ভারত। বিক্রম যে জায়গায় সফট ল্যান্ডিং করে সেই জায়গাটার নাম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) দেন ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’ (Shiva Shakti Point)। শিবশক্তি পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আছে বিক্রম। তার শরীর থেকে বেরিয়ে এসেছিল রোভার প্রজ্ঞান। ল্যান্ডিংয়ের দিন থেকে পরবর্তী ১৪ দিন সৌরশক্তির সাহায্যে কর্মক্ষম থাকবে প্রজ্ঞান, তারপর অকেজো হয়ে পড়বে। প্রজ্ঞান যা যা তথ্য আবিষ্কার করছে তার সমস্ত রেকর্ড পাঠিয়ে দিচ্ছে বিক্রমের কাছে। বিক্রম সেসব পাঠাচ্ছে ইসরোকে।
চাঁদে জলীয় বরফের (Water Ice) সন্ধান করবে প্রজ্ঞান। উপগ্রহের দক্ষিণ মেরুতে জলীয় বরফের উপস্থিতি আগেই টের পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার সরজমিনে তদন্ত করবে ইসরোর রোভার। চাঁদে জল বা জলীয় বরফ খুঁজে পাওয়া গেলে তা হবে মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। জলীয় বরফ যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে তা চন্দ্রাভিযানে যাওয়া মহাকাশচারীদের পানীয় জলের উৎস হতে পারবে। যন্ত্রপাতি ঠান্ডা করতেও কাজে লাগবে এই জলীয় বরফ। তাছাড়া, জলের অণু ভেঙে হাইড্রোজেন দিয়ে জ্বালানি উৎপাদন করা যাবে এবং পড়ে থাকা অক্সিজেন মহাকাশচারীদের কাজে লাগবে। এই সমস্ত ব্যবস্থা যথাযথ হলে, মঙ্গল গ্রহে অভিযানের জন্য বেস ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে চাঁদকে।