ফিরে দেখা ২০২৩, না ফেরার দেশে বাংলার যেসব তরকা
কলকাতা: আর মাত্র কয়েকটা দিন, ২০২৩ শেষের পথে। প্রতিটা বছরের শেষেই থেকে যায় একরাশ স্মৃতি। ভালো-মন্দে মেশানো একটা গোটা বছর যখন শেষের পথে তখন মনে পড়ে যায় নানান কথা। মনে পড়ে সেইসব মানুষের কথা যাঁরা আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন। এইবছরে বাংলা বিনোদন দুনিয়া জুড়ে অসংখ্য নক্ষত্রপতন (Bengal star)হয়েছে। অভিনয়ের দুনিয়া থেকে শুরু করে সাহিত্য জগতের যে সব বিশিষ্টজন আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন, তাঁদের স্মৃতির প্রতি রইল কলকাতা টিভি ডিজিটালের শ্রদ্ধা।
গৌতম হালদার: তাঁর হাত ধরেই ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিদ্যা বালন (Vidya Balan)। রাখি গুলজারকে নিয়ে ২০১৯ সালে ‘নির্বাণ’ নামে একটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন তিনি। রক্তকরবীর শতবর্ষে নাটকটি ফের মঞ্চস্থ হয় তাঁরই নির্দেশনায়। শম্ভু মিত্রের শেষ মঞ্চ উপস্থাপনা ‘দিনান্তের প্রণাম’-এও অংশ নেন গৌতম। এছাড়াও একাধিক নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। হীরু গঙ্গোপাধ্যায়, আমজাদ আলি খানকে নিয়ে বানিয়েছেন তথ্যচিত্র। এই বছরের নভেম্বর মাসে ইন্ডাস্ট্রি হারাল বিখ্যাত চিত্রপরিচালক গৌতম হালদার (Gautam Haldar)-কে।
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়: এ বছরই না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র স্রষ্টা। বাঙালি পাঠকের কাছে আবেগের আর এক নাম ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’। ষষ্ঠীপদর লেখনিতেই বাবলু, বাচ্চু , বিলু, ভোম্বল, বিচ্ছু এবং পঞ্চু- এই পঞ্চপাণ্ডব মলাটবন্দি বইয়ের পাতার বাইরে জীবন্ত হয়ে চরিত্র হয়ে উঠেছে। রহস্য আর রোমাঞ্চপ্রেমী কিশোরদের বারবার মুগ্ধ করে এই ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা সমগ্র’। ৮২ বছর বয়সে, হাওড়ার একটি নার্সিং হোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাঙালির অন্যতম প্রিয় সাহিত্যিক ।
সমরেশ মজুমদার: চলতি বছরেই প্রয়াত হয়েছেন ‘কালপুরুষ’ ও ‘কালবেলা’-র স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার। ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত হয় সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’। উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষের মতো একের পর এক কালজয়ী উপন্যাস উপহার দিয়েছেন তিনি। ১৯৮৪ সালে সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার পান সমরেশ। মে মাসে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৭৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
অনুপ ঘোষাল: কয়েক দিন আগেই স্তব্ধ হয়ে গেল ‘গুপী গাইন’ অনুপ ঘোষালের কালজয়ী কণ্ঠ। প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় সেই কবে খুঁজে এনেছিলেন অনুপকে তাঁর গুপি গাইন, বাঘা বাইন সিনেমার গান গাওয়াবেন বলে। তারপর আর অনুপকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। গুপি গাইন ছাড়াও সত্যজিতের হীরক রাজার দেশে ছবিতেও অনুপ গান গেয়েছেন। আরও অনেক বাংলা এবং হিন্দি ছবিতেও তিনি প্লে ব্যাক করেছেন। নজরুল গীতি এবং উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতেও তিনি ছিলেন অনন্য। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৮ বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি।
প্রদীপ সরকার: দুরঙ্গার শুটিংয়ের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন, হাসপাতাল থেকে ফিরে আর কাজের দুনিয়ায় ফেরা হয়নি খ্যাতনামা পরিচালক প্রদীপ সরকারের। ‘পরিণীতা’ (Parineeta), ‘মর্দানি’ (Mardaani) থেকে শুরু করে ‘হেলিকপ্টার এলা’ (Helicopter Eela), ‘লগা চুনরি মে দাগ’ (Laga Chunri Me Daag), ‘লাফাংগে পরিন্দে’ (Lafange Pharinde)-এর মতো একের পর এক দুর্দান্ত সব ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তিনি। চলতি বছরের মার্চ মাসে ৬৮ বছর বয়সে প্রয়াত হন পরিচালক।