
বিধানসভায় হুমায়ুন কবীরের ভাগ্য পরীক্ষা! রাজ্যের রাজনীতিতে মেরুকরণের উত্তাপ চরমে
সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা (West Bengal Assembly) সাক্ষী থাকবে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধ্যায়ের, যেখানে ভাগ্য নির্ধারণ হতে চলেছে হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir) -এর। তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতি সরগরম, আর দল তাঁর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকেই এখন নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। ইতিমধ্যেই তাঁকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে, যার উত্তরও তিনি দিয়েছেন, তবে নিজের অবস্থান থেকে এক ইঞ্চিও সরবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সম্প্রতি এক বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি বলেন, তাঁদের দল ক্ষমতায় এলে তৃণমূল (TMC)-এর মুসলিম বিধায়কদের বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হবে। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় হুমায়ুন কবীর ঘোষণা করেন, শুভেন্দুকে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)-এ প্রবেশ করতে দেবেন না। এই মন্তব্যের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দলীয় সিদ্ধান্তের চেয়ে জাতি ও ধর্মের প্রশ্নকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন হুমায়ুন কবীর, যা তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরেও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজনৈতিক মেরুকরণ রাজ্যের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। বিজেপির বক্তব্যের বিরোধিতা করলেও তৃণমূল কংগ্রেস প্রকাশ্যে হুমায়ুন কবীরের অবস্থানকে সমর্থন করছে না। মুসলিম নেতৃত্বের একাংশ শুভেন্দুর বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেও, দলীয় অবস্থান কী হবে, তা স্পষ্ট নয়। শুধু হুমায়ুন কবীর নন, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী (Siddiqullah Chowdhury)-সহ আরও কয়েকজন মুসলিম নেতা তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, যা রাজনীতিতে আরও বিভাজন সৃষ্টি করছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এই পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ নেবেন, তা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে চর্চা চলছে। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chattopadhyay) জানিয়েছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তৃণমূল কি দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে, নাকি মুসলিম ভোটব্যাংক (Muslim Vote Bank) ধরে রাখতে তাঁকে সতর্ক করেই ছেড়ে দেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কি এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে তাদের হিন্দু ভোটব্যাংক (Hindu Vote Bank) আরও সংহত করবে? নাকি তৃণমূল কৌশলী অবস্থান নেবে? এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে সোমবার বিধানসভায়। এই সিদ্ধান্ত শুধু হুমায়ুন কবীরের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না, বরং বাংলার রাজনীতির গতিপথেও বড় পরিবর্তন আনতে পারে।