চাঁদের মাটিতে প্রাতঃভ্রমণ প্রজ্ঞানের, এরপর কী হবে?
নয়াদিল্লি: চাঁদের মাটিতে পদচারণা প্রজ্ঞানের। বুধবার চন্দ্রপৃষ্ঠে সফল অবতরণের পর বৃহস্পতিবার বিক্রমের কোল থেকে বেরিয়ে এল রোভার প্রজ্ঞান। এবং ৬ চাকার পা নিয়ে সেও সফলভাবে চাঁদে প্রাতঃভ্রমণ করল। ইসরোর তরফে এদিন সকালে এক্স-বার্তায় জানানো হয়েছে, চন্দ্রযান-৩ রোভার: মেড ইন ইন্ডিয়া মেড ফর মুন! চন্দ্রযান-৩ রোভার ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে এল। চাঁদের মাটিতে হাঁটল ইন্ডিয়া।
ইসরোর তরফে এদিন সকালে জানানো হয়েছে, প্রজ্ঞান সফলভাবে নেমেছে চন্দ্রলোকে। এরপর তার কাজ ও গতিবিধির নিয়মিত খবরাখবর দিয়ে যাবে সংস্থা।
রোভার প্রজ্ঞান কী?
একটি মাইক্রোওভেনের মতো সাইজের এই মহাকাশ জ্ঞান-ভাণ্ডারটি। চাঁদের মাটিতে ৫০০ মিটার বা ১৬৪০ ফুট মতো ঘুরে বেড়ানোর সক্ষমতা আছে। তার মধ্যেই সে চাঁদের ভূবিজ্ঞান, খনিজ সম্পদ এবং প্রতিবেশ সম্পর্কিত গবেষণামূলক তথ্য পাঠাবে পৃথিবীতে। প্রজ্ঞানে বিভিন্ন ধরনের তথ্যপ্রযুক্তিগত যন্ত্রাংশ, যেমন ক্যামেরা, স্পেকট্রোমিটার এবং ম্যাগনেটোমিটার রয়েছে। একটি সম্পূর্ণ চন্দ্রদিবস জুড়ে কাজ করবে যন্ত্র-বিজ্ঞানী। একটি চন্দ্রদিবস মানে পৃথিবীর ১৪ দিন। প্রজ্ঞান কাজ করবে সৌরশক্তির দ্বারা এবং যোগাযোগ রেখে চলবে মূল চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের সঙ্গে। ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, বিক্রম এবং প্রজ্ঞান স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছে। দুটিরই ছবি খুব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে।
প্রজ্ঞানে কী রয়েছে?
আলফা পার্টিকল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার। যা চাঁদের রাসায়নিক যৌগ এবং খনিজ যৌগের খোঁজ দেবে। যাতে করে ভবিষ্যতে চাঁদের ভূপ্রকৃতি ও চন্দ্রগর্ভের প্রকৃতি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিকদের একটি সম্যক ধারণা দিতে সাহায্য করবে। প্রজ্ঞানে আরও রয়েছে লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ। যা চাঁদের মাটির প্রকৃতি এবং শিলার গঠন ও যৌগের ধরন ও জাতকুল বিষয়ে তথ্য আরোহন করবে।
চাঁদের পিঠে দাঁড়িয়ে থাকা বিক্রমে পাঠানো হয়েছে রম্ভা-এলপি (আরএএমবিএইচএ)। তার কাজ হবে কাছাকাছি থাকা চন্দ্রপৃষ্ঠের প্লাজমা (আয়নস এবং ইলেকট্রনস) ঘনত্বের তথ্যতালাশ করা। এই ঘনত্বের বদল সম্পর্কিত তথ্যও সংগ্রহ করবে বিক্রম।
এছাড়া আরও একটি যন্ত্রের সাহায্যে চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে বিক্রম। দিনের সঙ্গে রাতের তাপমাত্রার হেরফের এবং তার গড়ে জলবায়ুর পরিবর্তন সংক্রান্ত গবেষণাও এর ফলে সুগম হবে। উল্লেখ্য, বিক্রম নেমেছে চন্দ্রের দক্ষিণ মেরুতে। সেখানে প্রবল ঠান্ডা। উল্লেখ্য, লুনার সিসমিক অ্যাক্টিভিটি নামে পৃথক আরও একটি যন্ত্র চন্দ্রকম্পের (ভূমিকম্প) সম্ভাবনা অন্তত চারপাশের তথ্যভিত্তিক রিপোর্ট পাঠাবে।
পৃথিবীর হিসেবে ১৪ দিন পর রোভার প্রজ্ঞানের সৌরশক্তি ক্ষমতা কমে আসবে। এবং তা ফের বিক্রমের শরীরের সঙ্গে স্পর্শ করে দাঁড়াবে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিক্রমই সমস্ত তথ্য ইসরোকে পাঠাবে। প্রজ্ঞানের সঙ্গে ইসরোর সরাসরি যোগাযোগের কোনও লিঙ্ক নেই।