Talk on Facts | গর্ভবতী থাকাকালীন হলুদ-দুধ কি নিরাপদ?
গর্ভাবস্থায় সমস্ত মহিলারা নিজেদের সু-স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হন। ঠিক থাকে খাওয়া দাওয়া, পরিমান মতো ঘুম এবং নিজের পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়াও তাঁর কর্তব্য। গর্ভাবস্থায় আপনি যা কিছুই খাবেন তা আপনার স্বাস্থ্যের পাশাপাশি আপনার গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলবে। এই স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার কথা উঠলেই হলুদ দুহের নাম সবার মাথায় আসে। কিন্তু এই হলুদ দুষ একজন গর্ববনি মহিলার জন্য কতটা স্বাস্থ্যকর চলুন জেনে নেওয়া যাক।
- গর্ভবতী থাকাকালীন হলুদ-দুধ কি নিরাপদ?
হলুদ একটি মশলা। সেই মশলা দুধ গর্ভবতী মহিলাকে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে যা বিকাশকারী ভ্রূণের কঙ্কাল তন্ত্রের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। এই অবস্থায় হলুদ মেশানো দুধ খেতে পারেন কারণ এটি আপনার জন্য প্রচুর উপকারিতা নিয়ে আসবে, তবে সেটির পরিমাণের দিকে নজর রাখতে হবে। কারণ এটি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে তা আবার আপনার গর্ভস্থ ভ্রূণের স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
- গর্ভবতী থাকাকালীন হলুদ-দুধ খাওয়ার উপকারিতা:
যন্ত্রণা থেকে আরাম পাওয়া যায় হলুদ দুধ। গর্ভাবস্থায় অধিকাংশ মহিলার মধ্যেই পায়ের পাতা ফুলে যাওয়ার প্রবণতা থাকে এবং তাছাড়াও তাদের দেহে জলধারণ এবং হরমোনীয় পরিবর্তনগুলির কারণে অস্থি সন্ধির যন্ত্রণা বা জয়েন্ট পেইনের অভিজ্ঞতাও হয়ে থাকতে পারে। হলুদ এই সকল যন্ত্রণাগুলি নিরাময়ে সাহায্য করে।
সাধারণ সর্দি-কাশি এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে হলুদ দুধ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় সিরাম কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। হলুদের অ্যান্টিলিপিডেমিক বৈশিষ্ট্যগুলি ক্রমবর্ধমান কোলেস্টেরলের মাত্রা একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখে।
এছাড়াও, এক গ্লাস উষ্ণ হলুদ-দুধ, গর্ভবতী মহিলার মধ্যে হয়ে থাকা অস্বস্তি, যা তাদের একটি গভীর ও গাঢ় নিশ্চিন্ত ঘুম থেকে বঞ্চিত করে, তা দূর করে তার ভাল ঘুমের সহায়ক।
- এবার জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় হলুদ- দুধ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি,
হলুদ খুব বেশি মাত্রায় খাওয়া হলে, তা গর্ভবতী মহিলার পাশাপাশি তার গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকারক হতে পারে। যেমন,
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে হলুদ সেবন করলে, তা জরায়ুর পেশী সহ মসৃণ পেশীগুলিতেও সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে। আর গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে জরায়ুর সংকোচনগুলি শ্রম বেদনাকে উদ্দীপ্ত করতে পারে যা গর্ভপাতের দিকে পরিচালিত করে।
বেশি মাত্রায় কারকিউমিন ভ্রূণের মধ্যে বেশ কিছু ত্রুটি গড়ে তুলতে এবং ভ্রূণের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। যেহেতু কারকিউমিন হল হলুদের মধ্যে থাকা একটি প্রধান উপাদান, তাই সেটি ক্রমবিকশিত ভ্রূণের পক্ষে ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
খুব বেশি পরিমাণে হলুদ সেবন করলে তা রক্তক্ষরণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এটি আবার অস্বাভাবিক এবং অত্যধিক রক্ত জমাট বাঁধারও কারণ হয়ে উঠতে পারে যা আরও জটিলতাগুলি গড়ে তুলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় অত্যধিক পরিমাণে হলুদ সেবন করলে তা গা গুলানো, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, বুক জ্বালা এবং বদ হজমের কারণ হয়ে উঠতে পারে।