
ফের ঐতিহাসিক কীর্তি ইসরোর, সূর্যের পথে পাড়ি দিল আদিত্য এল ১
শ্রীহরিকোটা: ফের ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO)। চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3) মিশনের সাফল্যের পর সৌর অভিযানের সফল উৎক্ষেপণ করা হল। শনিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে আদিত্য এল১-কে (Aditya L1) নিয়ে সূর্যের পথে পাড়ি দিল পিএসএলভি-সি৫৭ (PSLV-c57) রকেট। কিছুক্ষণ পরে রকেটের দেহ থেকে বেরিয়ে আসে আদিত্য এল১। এবার সূর্যের দিকে সে একাই যাবে।
সরাসরি সূর্যের পথে যাচ্ছে না আদিত্য। প্রথমে পৃথিবীর কক্ষপথে বসবে সে। ক্রমাগত কক্ষপথের আকার বাড়ানোর সঙ্গে পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের সাহায্যেই পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের মায়া কাটিয়ে চলে যাবে মহাশূন্যে। এই পদ্ধতিতে সময় বেশি লাগলেও জ্বালানি কম লাগে। চন্দ্রযান ৩-এর ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল।
পৃথিবীর কক্ষপথ ছেড়ে বেরনোর পর ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট ১-এ (Lagrange Point 1) হ্যালো অরবিটে (Halo Orbit) গিয়ে বসবে আদিত্য এল১। পৃথিবী থেকে যে জায়গার দূরত্ব ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। এই পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে চার মাস মতো। যথাস্থানে পৌঁছনোর পর পাঁচ বছর ধরে সূর্য এবং মহাকাশের আবহাওয়া সম্পর্কিত একাধিক বিষয় নিয়ে গবেষণা করবে আদিত্য এল১।
ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট হল এমন জায়গা যেখানে সূর্য এবং পৃথিবীর মতো দুটি মহাজাগতিক বস্তুর অভিকর্ষজ বলের লড়াইয়ে ভারসাম্য থাকে। এই জায়গাগুলোতে কোনও জ্বালানি ছাড়াই মহাকাশযান এক জায়গায় স্থির থাকতে পারে। তাকে সূর্য নিজের দিকে আকর্ষণ করতে পারে না আবার পৃথিবীও নিজের দিকে টেনে নিতে পারে না। পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে এল ১ (L1) থেকে এল ৫ (L5), মোট পাঁচটি এমন স্পট আছে। পৃথিবীর সবথেকে কাছে এল ১ এবং এল ২, এই দুই জায়গা পর্যবেক্ষণের জন্য ভালো। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী টেলিস্কোপ নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ এল ২ পয়েন্টে রয়েছে।
ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট ১-এ পৌঁছে হ্যালো অরবিটে (Halo Orbit) গিয়ে থিতু হবে আদিত্য এল ১ মিশনের মহাকাশযান। সেখানে বসে মহাকাশের আবহাওয়া সম্পর্কে গবেষণা চালাবে আদিত্য এল ১। এছাড়াও সূর্যের তাপমাত্রার বিভিন্ন বিষয় যেমন করোনাল হিটিং, করোনাল মাস ইজেকশন, প্রি-ফ্লেয়ার ইত্যাদি বিষয়ে অজানা তথ্য জানার চেষ্টা চলবে। সূর্যের করোনা অর্থাৎ সূর্যের বায়ুমণ্ডলের সবথেকে বাইরের অংশ কেন তার কেন্দ্রের থেকেও বেশি উত্তপ্ত এই রহস্যের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালাবে আদিত্য এল ১।