Madan Mitra | কেন এত বেলাগাম মদন , দলের অন্দরে প্রশ্ন
কলকাতা: মদন মিত্র (Madan Mitra) কেন এমন বেলাগাম হলেন, তা নিয়ে তৃণমূলের (TMC) ভিতরে বাইরে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। শুক্রবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) রোগী ভর্তি করাকে কেন্দ্র করে শনিবার দিনভর যা হল, মদন যেভাবে দলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন, তাতে দল বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে। মদন এদিন সাফ বলেন, তৃণমূল কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। দলটা কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের? না। এই দলটা মা মাটি মানুষের। এই দলের পিছনে আমারও যথেষ্ট অবদান আছে। পাশাপাশি মদন জানিয়ে দেন, তিনি দল ছাড়ছেন না। এখানেই থেমে থাকেননি কামারহাটির এই কালারফুল তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলেন, কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) বিরুদ্ধে ৭৫০টি কেস আছে। তিনি এখন তৃণমূলের মাননীয় মুখপাত্র। ডেলোর মিটিংয়ে কী হয়েছিল, তা সিবিআইয়ের কাছে বলিনি বলে আমাকে ২৩ মাস জেলে থাকতে হয়েছিল। সেই ২৩ মাসের কাহিনি নিয়ে আমি বই লিখব। হলফ করে বলতে পারি, সেই বই বইমেলায় বেস্ট সেলার হবে।
আর কী বললেন মদন? তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে আমার সঙ্গে নেত্রীর কথা হয় না। কখনও দেখা হলে বলেন, কেমন আছ। এই পর্যন্ত। তিনি আমাকে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করার জায়গায় আমাকে রাখেননি। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে একটা কথা বলব, আমাকে যা খুশি বলুন, করুন। আপত্তি নেই। কিন্তু আমার পরিবারকে কিছু করবেন না। আমি খুব ভয়ে আছি। কেন তিনি ভয়ে আছেন? এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে গুন্ডাবাজির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। তার জন্যই নাকি মদনের মতো দাপুটে বিধায়ক ভয়ে আছেন। এর পরেই মদন মণিময়কে চাকর বাকর বলেও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, আমি মুখ্যমন্ত্রীর চাকর হতে পারি। কিন্তু তাঁর চাকরের চাকর হতে পারব না। তাঁর আরও অভিযোগ, এই অধিকর্তার আমলে এসএসকেএম হাসপাতালে বিস্তর দুর্নীতি হয়েছে। তিনি বলেন, দুএকটা ইডি, সিবিআইয়ের চিঠি এলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। তখন উনি হাসপাতালের কোন গেট দিয়ে পালাবেন, তা খুঁজে পাবেন না।
মদন আরও বলেন, দল আমাকে প্রতীক দিয়েছে। কিন্তু আমাকে মানুষ ভোট দিয়ে জিতিয়েছে। দল পদত্যাগ করতে বললে করব। কী দিয়েছেন উনি আমাকে? ওই তো একটা বিধায়ক। ছেড়ে দেব। একই সঙ্গে তিনি এসএসকেএম হাসপাতাল বয়কটেরও ডাক দিয়ে বলেন, সে নো টু পিজি হাসপাতাল।
প্রশ্ন হল, এর পরেও কি তৃণমূল নেত্রী মদনকে স্পেয়ার করবেন? এর আগে একাধিকবার মদন নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন দলের বিরুদ্ধে। বিধানসভা ভোটের আগে টিকিট বিলি থেকে শুরু করে কামারহাটি পুরসভার ভোট, মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি, অদ্ভুত পোশাক, সবেতেই তিনি বিতর্কে জড়িয়েছেন। নেত্রী তাঁকে বারবার সতর্ক করেছেন। তবে শনিবারের বারবেলায় মদন নেত্রীর সম্পর্কে, দলের সম্পর্কে, এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকর্তার সম্পর্কে, কুণালের সম্পর্কে যে সব মন্তব্য করেছেন, তা দলবিরোধী বললেও কম বলা হয়।