Coromandel Express Accident | বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বরখাস্ত ৭ রেলকর্মী
কলকাতা: ওড়িশার (Odisha) বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় (Balasore train accident) কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে সাত কর্মীকে বরখাস্ত (Suspended) করল ভারতীয় রেল (Indian Railway)। তাঁদের মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া তিন রেলকর্মীও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অনিল কুমার মিশ্র।
জানা গিয়েছে, বুধবার বালেশ্বরের বাহানাগা এলাকায় দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন বিজেপির সাংসদ প্রতাপ সারেঙ্গি। সেই সময় সাংসদের সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সাউথ-ইস্টার্ন রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অনিল কুমার মিশ্র সহ রেলে উচ্চপদস্থ কর্তারা। সেখানেই ট্রেন দুর্ঘটনায় গাফিলতির দায়ে ৭ কর্মীর বরখাস্তের কথা জানান তিনি। বলেন, ওই আধিকারিকরা সতর্ক থাকলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। রেলওয়ে এখনও পর্যন্ত সাতজন কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছে। এর মধ্যে তিনজনকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে। নিয়ম অনুসারে, ২৪ ঘন্টার জন্য কোনও সরকারি কর্মচারী গ্রেফতার হলেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়।
২ জুন ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনে পর পর তিনটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির মাথায় উঠে যায়। পাশের লাইন দিয়ে পাস করা বেঙ্গালুরু-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসেরও একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। তিনটি ট্রেনের প্রায় ১৫টি বগি রেললাইনের ধারে ছিটকে পড়ে। দুমড়ে-মুচড়ে যায় কামরাগুলি। মোট ২৯৩ জন যাত্রীর প্রাণহানি হয় এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায়। ১২০০-র বেশি যাত্রী আহত হন। এই ঘটনার তদন্ত করেছে সাউথ ইস্টার্ন সার্কেল কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি বা সিআরএস। তাদের তদন্তে জানা গিয়েছে, স্টেশনের উত্তর দিকের সিগন্যাল গুমটিতে সিগন্যালিং সার্কিট পরিবর্তনে ত্রুটি ছিল। আর সেই কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, দুর্ঘটনার পরই তিন রেলকর্মীকে আটক করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এদের মধ্যে ছিলেন বাহানাগা বাজার স্টেশনের স্টেশন মাস্টার, একজন রেল টেকনিসিয়ান সহ আরও এক রেলকর্মী। তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে রেল দুর্ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। যদিও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই জিজ্ঞাসাবাদের উপর ভিত্তি করে কয়েকদিন আগে রেলের তিন কর্মচারীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁরা হলেন, সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার অরুণ কুমার মহন্ত, সেকশন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আমির খান এবং টেকনিশিয়ান পাপ্পু কুমার। সিবিআইয়ের দাবি, তাঁদের কাজকর্মের জেরেই দুর্ঘটনা হয়েছিল। ওই তিনজনকেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ও ২০১ ধারায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদের সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়েছিল। বুধবার থেকে তাঁদের আরও চার দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই।