Jaipur Forest | সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে সবুজে ঘেরা জয়পুর জঙ্গলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ুন
সপ্তাহ ধরে কাজের চাপ, তার ওপর শহরের ভিড়ে মন ক্লান্ত। উইকেন্ডে শহর থেকে কিছুটা দূরে কাছের মানুষ বন্ধুদের নিয়ে ছুটি কাটাতে মন চাইছে। শহরের ভিড় আর এই গরম থেকে দূরে নিরিবিলিতে দু একটা দিন ছুটি কাটাতে ঘুরে আসুন বাঁকুড়ার জয়পুর ফরেস্ট (Jaipur Forest) থেকে। বাঁকুড়া জেলার (Bankura District) কথা বললেই মনে পড়ে টেরাকোটার মন্দির, শুশুনিয়া পাহাড় আরও কত কি। খুব সহজেই তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় জয়পুরের জঙ্গল। তাও আবার একদিনের সফর সেও কি। হ্যাঁ সপ্তাহ শেষে একদিনের জন্য ঘুরে আসা যায়। আপনারহ মন চাইলে শনি-রবি দুদিন থাকতে পারেন।
বাঁকুড়ার আনাচে কানাচে এমন বহু ভ্রমণের স্থান লক্ষ্য করা যায়। আর এখানে আছে জয়পুরের জঙ্গল। কলকাতা থেকে জয়পুর জঙ্গলের দূরত্ব প্রায় ১২৯ কিলোমিটার। গাড়ি করে যাওয়ার সময়ে চোখে পড়বে দুপাশে সবুজ বনের মাঝে পিচ বাঁধানো রাস্তা। দু’পা সারি ঘন জঙ্গল। শাল, সেগুন, বহেড়া, মহুয়া এক সঙ্গে মিলে মিশে রয়েছে। মাঝে মাঝে রোদ্দুর এসে উঁকি মারছে।কখনও কখনও হাতি বা হরিণের দল পাড় হয় এই রাস্তা দিয়ে। এই জঙ্গলের মধ্যে বাস হাতি, চিতল হরিণ, বুনো শেয়াল, বুনো শুয়োর, ময়ূর আর বহু নাম না জানা বহু পাখির। আরামবাগ হয়ে যে দিক দিয়ে জয়পুরের জঙ্গলে ঢুকছেন, এই দিকের রাস্তায় খুব একটা বন্য পশুর ভয় নেই।
অনেক আবার এই নৈসর্গিক দৃশ্য দেখার জন্য রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেন। তবে সব সময় যে হরিণ বা হাতি দেখা যাবে তা নয়, যেটা সবসময় দেখা যাবে সেটা এই প্রকৃতির শোভা। বাঁকুড়ার জয়পুর জঙ্গল যেখানে দুদিন থাকলেই সেই অভিজ্ঞতা সহজে ভোলার নয়। সব মিলিয়ে এটাই বলা যায় সপ্তাহের শেষে একদিনের বা বড়জোর দুদিনের জন সমুদ্রের দূরে মন ভালো করা একটা জায়গা। জয়পুর জঙ্গলের এই রাস্তা ধরে সোজা চলে গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন বিষ্ণুপুর। যদি বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) টেরাকোটার মন্দির দেখার ইচ্ছা হয় তাহলে আপনাকে একটু সকাল সকাল বের হতে হবে বাঁকুড়ার উদ্দেশ্যে।
এই জঙ্গলে ২০০৫ সালে বন দফতরের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে পাঁচতলার ওয়াচ টাওয়ার।ওয়াচটাওয়ার থেকে বেলাশেষের সূর্যের লালচে আভা সবুজ বনানীর ওপর যখন ছড়িয়ে পড়ে প্রকৃতির এক অনন্য রূপের সাক্ষী থাকবেন। সূর্যোদয়ও অপূর্ব লাগে এখান থেকে। জঙ্গল দেখার মাঝেই বিরতি নিয়ে ঘুরে আসা যায় জয়পুর গ্রামের ভেতরে দেপাড়া ও দত্ত পাড়ার দুটি পঞ্চরত্ন মন্দির যার গায়ে সুন্দর টেরাকোটার সাজ। জয়পুর গ্রাম থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে যে গ্রাম, তার নাম গোকুলনগর। এই গ্রামে রয়েছে মাকড়া পাথর দিয়ে তৈরি পঞ্চ্রত্ন গোকুল চাঁদ মন্দির।
একদিনের সফরে পায়ের নীচে সবুজের গালিচা বিছানো নিরিবিলি প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার জন্য এটা সেরা ডেস্টিনেশন। তবে আপনি চাইলে গভীরেও ঢুকতে পারেন জয়পুর জঙ্গলের। সেই ক্ষেত্রে এই জঙ্গলের থাকার জন্য রিসর্ট, লজ, হোটেলও রয়েছে। চাইলে বিষ্ণুপুরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যুরিস্ট লজেও থাকতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে বিষ্ণুপুর, সেখান থেকে গাড়িতে করে জয়পুর জঙ্গল। অথবা কলকাতা থেকে গাড়ি করে কোনা এক্সপ্রেস ধরে দানকুনি, আরামবাগ, কোতল্পুর পেরিয়ে চলে যান জয়পুর জঙ্গল।