গল্প হলেও সত্যি! বডি বিল্ডিং ছেড়ে অভিনয়ে পা, পর্দার ভাঁড় বাস্তবের রাসভারী মানুষ! জানুন রবি ঘোষের না জানা গল্প
পর্দায় তাঁকে দেখলে আট থেকে আশি সকলের মুখে ফুটত হাসি। তবে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একেবারে অন্য ধরনের মানুষ। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা। কোনও পরিকল্পনা ছিল না রুপোলি পর্দায় কাজ করার। প্রতিভাবান সেই অভিনেতা রবি ঘোষের (Robi Ghosh) আজ জন্মদিন।
১৯৩১ সালে কোচবিহারে জন্ম হয় রবি ঘোষের। পুরো নাম রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দস্তিদার। পরবর্তীতে কাজের তাগিদে নিজের নাম ছোট করে নেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন তিনি। কোচবিহারে জন্ম হলেও রবি ঘোষের বড় হওয়া কলকাতায়। সাউথ সাবার্বান মেন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন অভিনেতা। এরপর ভর্তি হন আশুতোষ কলেজে। বিষয় বিজ্ঞান হলেও, রবি ঘোষের আগ্রহ ছিল অন্য পেশায়।
প্রথমেই অভিনয় করার কথা ভাবেননি তিনি। বরং আগ্রহ ছিল বডি বিল্ডিংয়ে। ভেবেছিলেন তাই হবেন। কিন্তু ভাগ্যের ফের। মঞ্চে অভিনয়ের মাধ্যমে পা রাখেন সিনে জগতে। ১৯৫৯ সালে ‘আহবান’ সিনেমার হাত ধরে রুপোলি পর্দায় ডেবিউ করেন রবি ঘোষ। তবে সাফল্য দিয়েছিল ‘গল্প হলেও সত্যি’। ছবিতে ‘ধনঞ্জয়’ চরিত্রটি আজও মন ভালো করে দেয় মানুষের।
রবি ঘোষ অভিনীত ‘গুপি গায়েন বাঘা বায়েন’ ছবিতে বাঘার চরিত্রে অভিনয় করে তিনি খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে যান অভিনেতা। তারপর ঝুলি থেকে এক এক করে বেরিয়েছে ‘গুপি গায়েন বাঘা বায়েন’, ‘হীরক রাজার দেশে’ ও পরবর্তীতে ‘গুপি বাঘা ফিরে এল’… এই তিনটি সিক্যুয়ালে বাঘা চরিত্রের ট্রেডমার্ক তৈরি করে দিয়েছিলেন রবি ঘোষ। তাঁর অনন্য রসবোধ দিয়ে মানুষকে হাসিয়ে পেট ব্যথা করিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখতেন অভিনেতা। পর্দায় যতটা মজার, বাস্তব জীবনে ঠিক ততটাই গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ ছিলেন অভিনেতা। প্রয়োজনের বাইরে একটা শব্দ অপচয় করতেন না তিনি। সেটে সাধারণত চরিত্রের মধ্যেই থাকতেন।
রাসভারী রবি ঘোষকে সিনেমা জগতের লোকেরা ডাকতেন ‘সিন স্টিলার’ বলে। ছোট হোক বা বড় যে কোনও দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে পারতেন পর্দায়। অনায়াসে রপ্ত করতে পারতেন যে কোনও চরিত্র। তাঁর চরিত্রগুলিতে থাকত বুদ্ধিদীপ্ত কমেডির ছাপ। ব্যক্তিগত জীবনে খাদ্যরসিকছিলেন অভিনেতা। প্রিয় খাবার ছিল লুচি আর পাঁঠার মাংস।
কিংবিদন্তি অভিনেতা রবি ঘোষের জন্মদিনে কলকাতা টিভি ডিজিটালের তরফ থেকে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য।