Oppenheimer | Top Secret | নিজের সৃষ্টি দেখে কেঁপে উঠেছিলেন পরমাণু্ বোমার জনক রবার্ট ওপেনহাইমার
নয়াদিল্লি: নিজের সৃষ্টি দেখে কেঁপে উঠেছিলেন পরমাণু্ বোমার জনক রবার্ট ওপেনহাইমার (J Robert Oppenheimer)। কঠিন সময় পাশে পেয়েছিলেন নেহরুকে (Jawaharlal Nehru)। সিনেমার মাধ্যমে ‘পরমাণু বোমার জনক’ ওপেনহাইমারকে আবারও ফিরিয়ে এনেছেন হলিউড পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলান। তাঁর ছবি এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। ক্রিস্টোফার নোলানের সর্বশেষ চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু রবার্ট জে ওপেনহাইমার ছিলেন একজন আমেরিকান পদার্থবিদ যাকে ‘পরমাণু বোমার জনক’ বলা হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বই দাবি করেছে যে মিঃ ওপেনহাইমারকে ভারতে অভিবাসন এবং এখানে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে তার তৈরি পারমাণবিক বোমা ফেলার পর, মিঃ ওপেনহাইমার শিউড়ে উঠেছিলেন। তাঁর তৈরি পরমাণু বোমা, যা অভিশাপ হয়ে নেমে এসেছিল জাপানের বুকে। উন্নয়নের পর্যায়ে, তিনি শক্তিশালী বোমা তৈরির বিষয়ে তার সহকর্মীদের নৈতিক দ্বিধাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, বলেছিলেন যে তারা কেবল তাদের কাজ করছে এবং অস্ত্রটি কীভাবে ব্যবহার করা উচিত সে সম্পর্কে সিদ্ধান্তের জন্য তারা দায়বদ্ধ নয়। রবার্ট জুলিয়াস ওপেনহাইমার না-থাকলে হয়তো তৈরিই হত না ‘ম্যানহাটন প্রজেক্ট’। বিধ্বংসী হলেও পরমাণু বোমা ‘লিটল বয়’ আর ‘ফ্যাট ম্যান’ নাম হত ইতিবাসের পাতায় লেখা থাকত না। হিরোশিমা ও নাগাসাকির ভয়াবহতার সঙ্গে পরিচিত আমরা সকলেই। ঘাণঘাতী পরমাণু বোমা মাটি স্পর্শ করতেই মুহূর্তের মধ্যে অপরিসীম তাপ উৎপন্ন করেছিল। চোখের নিমেষেই নিচিহ্ন হয়ে গিয়েছিল হিরোশিমা আর নাগাসাকি সভ্যতা। প্রাণ গিয়েছিল কয়েক লক্ষ মানুষের।
পরমাণু বোমার এমন ‘সাফল্যে’ যাঁর সবচেয়ে বেশি খুশি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু স্রষ্টা নিজেই চূড়ান্ত মানসিক অবসাদে চলে গিয়েছিলেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এই বোমা কোনও দিন কোনও দেশের কাছে আত্মরক্ষার হাতিয়ার হতে পারে না। আগ্রাসীদের হাতিয়ার। এটা ধ্বংস ডেকে আনবে। এক পরাজয়ের সামনে দাঁড়ানো দেশের উপর যা প্রয়োগ করা হয়েছিল। দেরিতে হলেও পরমাণুর স্রষ্টার বোধদয় ঘটেছিল। বিশ্বাসঘাতকতা আর কমিউনিস্ট ষড়যন্ত্রের তালিকায় ওপেনহেমারের নাম চলে আসে। রাতারাতি নিরাপত্তাকর্মীদের সরিয়ে এবং অন্য সরকারি সুবিধে কেড়ে তাঁকে ‘সাধারণ’দের দলে ফেলে দেওয়া হয়। এর পর থেকে গোটা জীবন অনুশোচনা বয়ে বেড়াতে হয়েছিল তাঁকে। জীবনের সঙ্কটের সময়ে ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ এবং ভারতে বসবাসের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তাঁকে। হোমি জাহাঙ্গির ভাবার আত্মজীবনীতে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন লেখক বখতিয়ার কে দাদাভয়। তিনি জানিয়েছেন, ওপেনহেমার এবং ভাবার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। সংস্কৃত জানতেন’গীতা’ পড়েছিলেন। ভারত নিয়ে আগ্রহও ছিল।
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধের দাবিতেই লড়াই চালিয়েছেন। হাইড্রোজেন বোমা তৈরির বিপক্ষে ছিলেন তিনি। আমেরিকা সরকারের বিপক্ষে মতও দিয়েছিলেন।