Bolpur | Shantiniketan | করোনা কালের তিন বছর ধরে বন্ধ শান্তিনিকেতনের আশ্রম
বোলপুর: করোনা কালের তিন বছর পার হলেও আজও বন্ধ রাজ্যের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র শান্তিনিকেতনের আশ্রম প্রাঙ্গণ। রবি ঠাকুরের টানে দূর দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ফিরে যাচ্ছে একরাশ ক্ষোভ এবং হতাশা নিয়ে। রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত শান্তিনিকেতন। আপামর বাঙালির তো বটেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের তীর্থভূমি শান্তিনিকেতনে বেড়াতে আসেন পর্যটকেরা। সারা বছর শান্তিনিকেতনে দেশ-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা থাকে।
শান্তিনিকেতন মানেই তো রবীন্দ্রনাথ। কবির কর্মভূমি। শান্তিনিকেতনে বেড়াতে এলে ঘুরে দেখেন রবীন্দ্র মিউজিয়াম। যা, রবীন্দ্রভবন নামে পরিচিত। রবীন্দ্র মিউজিয়ামে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত নানান জিনিস। রয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পদক। এছাড়াও রবীন্দ্রভবনের মধ্যেই রয়েছে কবির বেশকিছু বাসভবন। উদয়ন, শ্যামলী, কনার্ক, শ্যামলী, পুনশ্চ একাধিক রবি ঠাকুরের বাসভবন। পর্যটকরা রবীন্দ্র মিউজিয়ামের পাশাপাশি ঘুরে দেখেন শান্তিনিকেতনের রবি ঠাকুরের আশ্রম প্রাঙ্গণ। যেখানে তিনি আমার প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ, আত্মার শান্তি।
রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতনের আশ্রম প্রাঙ্গণ পর্যটকরা পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখেন ছাতিমতলা, আম্রকুঞ্জ, পাঠভবন, গৌড় প্রাঙ্গণ, কলাভবন, সংগীত ভবন, কালো বাড়ি একাধিক রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত অঞ্চল। কিন্তু এ সব কিছুই এখন পর্যটকদের কাছে অতীত। কারণ বিদ্যুৎ বাবু। মানে বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী জেলখানায় পরিণত করে রেখেছেন রবি ঠাকুরের সাধের শান্তিনিকেতনকে। দুই দেশে সীমান্তে থাকা করা নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে শান্তিনিকেতনের আশ্রম প্রাঙ্গনে। ওই রবি স্মৃতির জড়িত অঞ্চল গুলি ঘুরে দেখতে পান না পর্যটকরা।
হাবড়া থেকে আগত রাজশ্রী নন্দী নামে এক পর্যটকের কথায় রবি ঠাকুরের টানে বারবার দৌড়ে আসি শান্তিনিকেতনে। কিন্তু খুব দুঃখ হয়। রবীন্দ্রনাথ কি এই জেলখানা চেয়েছিলেন? যেখানে নেই প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ, আত্মার শান্তি। কিছুই তো দেখা হল না। পাঠভবনে ছেলেমেয়েরা গাছের তলায় ক্লাস করে। বড্ড ইচ্ছে ছিল স্বচক্ষে দেখা। তা সম্ভব হল না। একরাশ হতাশা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে।
বিশ্বভারতীর প্রবীণ আশ্রমিক অপর্ণা দাস মহাপাত্র বলেন, সে শান্তিনিকেতন আর নেই। যেখানে শিক্ষক এবং ছাত্রদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। শান্তিনিকেতনের আশ্রম প্রাঙ্গণ পর্যটকরা পায়ে হেঁটে ঘুরতে পারতেন। আমরাই ছাত্রী জীবনে পর্যটকদের গাইড হিসেবে কাজ করে দিতাম। ঘুরিয়ে দেখাতাম রবি ঠাকুরের আনাচে কানাচে। এখন তো দেখছি সব কিছুই বন্ধ। তালা মারা। আমরা নিজেই ঢুকতে পারিনা প্রাক্তানি হিসেবে। আমরা পড়াশোনা করেছি পাঠভবন থেকে। যদি বিকালে একটু যাবো ভাবি তার উপায় নেই। কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে। কষ্ট হয় ভাবলে। বিষয়টা অত্যন্ত বেদনার।