Satabdi Roy | মদনের পর সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে বিস্ফোরক শতাব্দী
বীরভূম: সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে মদন মিত্রের পর এবার মুখ খুললেন বীরভূমের দুই তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় এবং অসিত মাল। আবার হাসপাতালে দালালচক্রের অভিযোগ তুললেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিককেও। সিসিটিভি দেখে দালালচক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। মাস দুয়েকের মধ্যে এ নিয়ে ফের পর্যালোচনা বৈঠকে বসা হবে বলে জানান শতাব্দী।
প্রসঙ্গত, এক সময়ের রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতাল সুপার স্পেশ্য়ালিটি থেকে স্বাস্থ্য জেলা হাসপাতাল হয়ে এখন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু পরিষেবা সেই তলানিতেই থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আজও কথায় কথায় রোগীদের রেফার করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিংবা স্থানীয় কোনও নার্সিংহোমে। অভিযোগ, এক শ্রেণির দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন রোগীর আত্মীয়রা। এ নিয়ে একাধিক অভিযোগ পেয়েছেন সাংসদ থেকে শুরু করে বিধায়করা। এসব নিয়ে রামপুরহাট নিশ্চিন্তপুরে তারাবিতান গেস্ট হাউসের সভাকক্ষে বৈঠকে বসেন বীরভূম এবং বোলপুরের সাংসদ শতাব্দী রায়, অসিত মাল, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক বিধান রায়-সহ স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। সেখানেই দালালরাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শতাব্দী রায় অভিযোগ করেন, একজন রোগীর জন্য তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার ফোন করেছিলেন। কিন্তু কোনও সদুত্তর পাননি। বাধ্য হয়ে রোগীকে নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হয়। জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে পরিষেবা পাবে? এভাবে চলতে পারে না। আরও কিছু অভিযোগ রয়েছে। সেগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই নিয়ে সাংসদ অসিত মাল বলেন, হাসপাতালের কিছু চিকিৎসকের সঙ্গে অসাধু কর্মী এবং দালালচক্র রোগীদের নার্সিংহোমে যেতে বাধ্য করে। হাসপাতালে উন্নত পরিষেবা থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে এক্স-রে, ইউএসজি-সহ বিভিন্ন পরীক্ষা করতে বাধ্য করছে দালালচক্র। এছাড়া রোগীদের সঙ্গে নার্সিং স্টাফদের দুর্ব্যবহার বন্ধ হওয়া দরকার। দুপুরে ভর্তি হওয়া রোগীকে একদিন পর কেন চিকিৎসক দেখবেন?’ এছাড়াও জন্ম ও মৃত্যু শংসাপত্র দ্রুত দেওয়ারও দাবি জানান অসিতবাবু। উল্লেখ্য, এতদিন হাসপাতালের সামনে জল জমা নিয়ে সরব হয়েছিলেন রোগীর আত্মীয়রা। এবার এ নিয়ে অভিযোগ তুললেন খোদ সাংসদ অসিত মাল। তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে হাসপাতালের সামনে জল জমা বন্ধ করতে হবে।’
দালালচক্রের কথা মেনে নেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী অনেক উন্নয়ন করেছেন। কিছু ত্রুটি রয়েছে। তা সংশোধনের চেষ্টা চলছে।’ জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘কিছু অভিযোগ উঠেছে। সেগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। আগামী দিনে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে সেদিকে নজর দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বলা হয়েছে।’