
Sundarban | মীন ধরার জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় নদীর জলে, সুন্দরবনে বাড়ছে স্ত্রী রোগ
সুন্দরবন: বেঁচে থাকতে হলে যে মীন ধরতেই হবে। যদিও সরকারিভাবে নিষিদ্ধ মীন ধরা। কিন্তু দু’মুঠো গরম ভাত খাওয়ার জন্য এর বাইরে আর কোনও জীবিকা যে নেই সেখানে। তাই বাঘ-কুমিরের বিপদ তুচ্ছ তাঁদের কাছে। এইভাবেই কোনওরকমে টিকে আছেন সুন্দরবনের (Sundarban) মেয়েরা। অল্প বয়সী কিশোরী থেকে বধূ এমনকি বৃদ্ধা, দক্ষিণরায়ের দেশে এটাই মেয়েদের জীবন। এর ফলে সুন্দরবনে ক্রমশ বাড়ছে স্ত্রী রোগ।
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবন লাগোয়া ছটি ব্লক হাড়োয়া, মিনাখা, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ ও সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লক বিস্তীর্ণ অঞ্চল নদীমাতৃক। পাশাপাশি, সুন্দরবনে রয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ একক ম্যানগ্রোভ অরণ্যভূমি অঞ্চল। আর যে অরণ্যভূমিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিচরণভূমি। নদী, খাল, খাঁড়িগুলিতে আছে কুমির-সহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী। স্বামীরা যখন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গভীর জঙ্গলে বা নদীতে মাছ ধরতে যান, সংসার সামলে বাড়ির বধূরা রায়মঙ্গলে যান মীন সংগ্রহে। শুধু রায়মঙ্গল নয়, সন্দেশখালির কলাগাছি, বেতনি, ডাঁসা সহ নানান নদীতে নেমে দিনের বেলায় মাছের মীন সংগ্রহ করেন। তাঁরা বাঁশের চটার ফ্রেমে আটকানো ঘন মশারির নেট লাগানো টানা জাল আর একটা অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি নিয়ে নদীতে নেমে পড়েন। কুমির, কামোটের ভয় উপেক্ষা করেই তাঁদের এই জীবন সংগ্রাম চলে। ভাটার শুরু থেকে জোয়ার পর্যন্ত টানা জলে দাঁড়িয়ে চলে মীন সংগ্রহের কাজ৷ জোয়ার পুরোপুরি চলে এলে উঠে পড়েন৷ আবার ভাটা শুরু হলে নদীতে নামেন৷
এইভাবে প্রতিদিন নদীর জলে প্রায় ছয়-সাত ঘণ্টা করে দাঁড়িয়ে থাকেন সুন্দরবনের মহিলারা। আর তাতেই ক্রমশ বাড়ছে জরায়ুর রোগ। শুধু জরায়ুর রোগ হচ্ছে এমন নয়, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে দেখা দিচ্ছে অন্যান্য অসুখ ও চর্মরোগ। এমনই রোগে আক্রান্ত সন্দেশখালির এক মহিলা জানান, শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি রোগ দেখা দিয়েছে। সেইসঙ্গে হাতে-পায়ে হাজার জ্বালায় আমাদের প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার যোগাড়।