সুদূর গ্রহে জলের সন্ধান, রয়েছে কার্বন অণু! প্রাণের সংকেত নিয়ে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা
কলকাতা: পৃথিবী (Earth) ছাড়া ব্রহ্মাণ্ডের (Universe) আর কোথাও প্রাণ আছে কি না তা নিয়ে নিরন্তর খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই খোঁজেই এবার বড়সড় সাফল্য মিলল। বহুদূরের এক গ্রহে মহাসমুদ্রের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার (NASA) জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে (James Webb Space Telescope) পৃথিবীর ৮.৬ গুণ বড় এক এক্সোপ্ল্যানেটের (Exoplanet) সন্ধান পেয়েছে যার নাম কে২-১৮ বি (K2-18 b)। এই গ্রহে মিথেন এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড সহ কার্বনযুক্ত অণুর দেখা মিলেছে। প্রসঙ্গত, আমাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহদের এক্সোপ্ল্যানেট বলা হয়।
পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী টেলিস্কোপের সন্ধান এও বলছে, কে২-১৮ বি ‘হাইসিন’ এক্সোপ্ল্যানেট হতে পারে অর্থাৎ এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে হাইড্রোজেন (Hydrogen) থাকতে পারে এটির পৃষ্ঠদেশে মহাসমুদ্র থাকতে পারে। কে২-১৮ নামের এক শীতল বামন তারার কক্ষপথে বাসযোগ্য জোনে অবস্থান করছে গ্রহটি। পৃথিবী থেকে ১২০ আলোকবর্ষ দূরে লিও নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থান করছে গ্রহটি। তাকে নিয়ে গবেষণা করতে উদগ্রীব হয়ে আছেন বিজ্ঞানীরা।
নাসার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিথেন এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডের প্রাচুর্য এবং অ্যামোনিয়ার অভাব যে তত্ত্বকে সমর্থন করে তা হল কে২-১৮ বি-তে হাইড্রোজেন পরিপূর্ণ বায়ুমণ্ডলের নীচে জলের মহাসাগর রয়েছে। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের প্রাথমিক অনুসন্ধান বলছে, ডাইমিথাইল সালফাইড (DMS) নামের এক অণুও থাকতে পারে। পৃথিবীতে এই ডিএমএস শুধুমাত্র প্রাণের দ্বারা সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বেশিরভাগ ডিএমএস সামুদ্রিক পরিবেশের উদ্ভিদ প্ল্যাঙ্কটন থেকে নির্গত হয়।
এই গবেষণার মুখ্য লেখক এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Cambridge University) জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকু মধুসূদন বলেছেন, “অন্যত্র প্রাণের অস্তিত্বে বৈচিত্র্যময় বাসযোগ্য পরিবেশকে বিবেচনা করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের এই খোঁজ তা-ই বলে দিচ্ছে। প্রথাগতভাবে প্রাণের খোঁজে ছোট পাথুরে এক্সোপ্ল্যানেটের দিকে নজর থাকত কিন্তু বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে আকারে বড় হাইসিন জগত অনেক বেশি সহায়ক।” প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে নাসার কে২ মিশনে প্রাথমিকভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল এই কে২-১৮ বি। এখন জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে আরও বিশদে গবেষণা করা যাচ্ছে এই বহির্বিশ্বের গ্রহকে নিয়ে।