Titanic | Titan Tragedy | নিছক দুর্ঘটনা নাকি গাফিলতি! টাইটান ট্রাজেডির কারণ কী?
বস্টন: অদৃষ্টের পরিহাস একেই বলে। ১১১ বছর আগে অতলান্তিকের তলায় নিমজ্জিত হয়েছিল সেই সময়ের সবথেকে বড় এবং বিলাসবহুল জাহাজ আরএমএস টাইটানিক (RMS Titanic)। সাম্প্রতিক কালে অভিশপ্ত জাহাজের ধ্বংসাবশেষ হয়ে উঠেছিল আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে ধনকুবেরদের সমুদ্রের তলায় নিয়ে যেত ডুবোজাহাজ টাইটান (Titan)। শেষ পর্যন্ত আটলান্টিক মহাসাগরের (Atlantic Ocean) নীচে শয্যা নিল সে। ২১ ফুট লম্বা ওই ডুবোজাহাজে ছিলেন পাঁচজন যাত্রী— যে পর্যটন সংস্থা এই অভিযানের দায়িত্বে সেই ওশানগেট-এর (OceanGate Inc) সিইও স্টকটন রাশ (Stockton Rush), পাকিস্তানি শিল্পপতি শাহজাদা দাউদ ও তাঁর কিশোর পুত্র সুলেমান, ব্রিটিশ শিল্পপতি হেমিশ হার্ডিং, পল-অরিঁ নারগিওলেঁ।
কী হয়েছিল টাইটানিক সাব বা টাইটানের?
বিশেষজ্ঞদের অনুমান— ‘ক্যাটাস্ট্রফিক ইমপ্লোশন’। সোজা কথায় প্রবল শক্তি এবং গতিসম্পন্ন জলের চাপে ধ্বংস হয়েছে টাইটান। তার ধ্বংসাবশেষ এখন উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে ৩৮০০ মিটার বা ১২,৪০০ ফুট গভীরে পড়ে আছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ থাকে ১৪.৭ পাউন্ড প্রতি বর্গ ইঞ্চি বা পিএসআই (PSI)। টাইটানিক এবং টাইটান যেখানে পড়ে আছে সেখানে জলের চাপ ৬০০০ পিএসআই। মানবদেহ সেই চাপ সহ্য করতে পারে না। ৬০০০ পিএসআই কতটা মারাত্মক তা বোঝার সুবিধা করতে একটা তুলনা দিচ্ছি। বিশাল চেহারার গ্রেট হোয়াইট হাঙরের কামড়ের জোর ৪০০০ পিএসআই। ওই গভীরতায় ডুবোজাহাজের গায়ে সামান্য ক্ষত বা যে কোনও কারণেই ইমপ্লোশন হলে চোখের নিমেষে দুমড়ে মুচড়ে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাবে টাইটান এবং সম্ভবত তাই হয়েছে।
ওয়াশিংটনের ওশানগেট সংস্থার বানানো এই ডুবোজাহাজ ওই পরিমাণ জলের চাপ সহ্য করতে পারে, এর আগেও টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ ভ্রমণে গিয়েছে সেটি। তাহলে এমন হল কেন?
টাইটানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেও। ওশানগেট সংস্থারই প্রাক্তন ডিরেক্টর ডেভিড লকরিজকে জড়িয়ে এক মামলাও হয়েছিল। পরীক্ষামূলকভাবে কার্বন-ফাইবার দিয়ে ডুবোজাহাজ নির্মাণ সতর্ক করায় ২০১৮ সালে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তার মানে গাফিলতির প্রসঙ্গ থেকেই যাচ্ছে। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের (Imperial College) ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোফেসর রডরিক স্মিথ জানিয়েছেন, সম্ভবত জলের চাপ সামলাতে পারেনি ডুবোজাহাজের দেওয়াল, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করতে হবে। এমনকী তখনও প্রকৃত কারণ বলা মুশকিল।