WTC Final | Wriddhiman Saha | বাতিল রাহানে সুযোগ পেলেন, কোন যুক্তিতে ঋদ্ধি নেই?
কলকাতা: বার্ষিক চুক্তির তালিকা থেকে বাতিল করে দেওয়া অজিঙ্ক্য রাহানেকে (Ajinkya Rahane) টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের (WTC Final) দলে নিয়েছে বিসিসিআই (BCCI)। কোনও ক্রিকেটারের চুক্তি বাতিল মানে তাঁকে আর জাতীয় দলের জার্সিতে ভাবছে না বোর্ড। কিন্তু কথায় আছে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) চোটের জন্য নেই, ইংল্যান্ডের সুইং সহায়ক পরিবেশে মিডল অর্ডারে ব্যাট করার মতো রাহানে ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ‘ঐতিহাসিক’ এই সিদ্ধান্ত আপাতদৃষ্টিতে ইতিবাচক।
কিন্তু রাহানের অন্তর্ভুক্তি কি এক বড় প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে না? যদি একটা ম্যাচের জন্য তাঁকে ফেরানো যায়, ঋদ্ধিমান সাহাকে (Wriddhiman Saha) কেন ফেরানো গেল না? বঙ্গসন্তানকে বঞ্চিত রাখার কোনও যুক্তিই কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। বিসিসিআইয়ের বার্ষিক চুক্তির তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন ঋদ্ধিও। কিন্তু বার্ষিক চুক্তি যে শেষ কথা বলছে না তা তো দেখাই গেল।
উইকেটকিপার হিসেবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দলে শ্রীকর ভরতের (KS Bharat) সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে কে এল রাহুলকে (KL Rahul)। যাঁকে কি না বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির (Border-Gavaskar Trophy) মাঝপথে বসিয়ে দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। তাঁর জায়গায় ওপেন করছেন শুভমান গিল (Shubman Gill) এবং তিনি যে ফর্মে খেলছেন তাতে ওই স্পটে রাহুলের ফেরা আপাতত অসম্ভব। এদিকে ভারতের মাটিতেই ভরত কিপিংয়ের যে নমুনা দেখিয়েছেন তাতে ওভালে রাহুলকেই খেলানো হবে তা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু রাহুল ওই পরিবেশে ভালো কিপার কি? সন্দেহ আছে। বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই যে এঁদের সবার থেকে শত যোজন এগিয়ে ঋদ্ধি। তাহলে কেন তাঁকে নেওয়া হল না?
একটা যুক্তি হতে পারে, রাহুল ঋদ্ধির চেয়ে ভালো ব্যাটার। কিন্তু প্রথমত, ব্যাটিং ব্যর্থতার জেরেই তাঁকে বসানো হয়েছিল। আর চলতি আইপিএলে রাহুলের চেয়ে ভালো ফর্মে আছেন ঋদ্ধি। রাহুলের রানসংখ্যা হয়তো সামান্য বেশি হতে পারে কিন্তু স্ট্রাইক রেট দেখলে হাসি পাবে। আগের ম্যাচের তাঁর মন্থর ব্যাটিংয়ের কারণেই ম্যাচ হেরেছে লখনউ। অন্যদিকে গুজরাতের হয়ে ওপেন করে ঋদ্ধি যতক্ষণ থাকছেন, চালিয়ে খেলছেন, দলের স্বার্থে খেলছেন।
এবার যুক্তি আসতে পারে, আইপিএলের (IPL) ফর্ম দিয়ে টেস্টের নির্বাচন হতে পারে না। ঠিক, যুক্তিটা ঠিক। কিন্তু তাহলে রাহানে সুযোগ পেলেন কী করে? ২০২২-২৩ রঞ্জি মরশুমের জন্য নিশ্চয়ই নয়। রঞ্জি ট্রফিতে (Ranji Trophy) ৫৩ গড়ে ৬৩৪ রান করা ব্যাটারের জন্য তো টেস্ট দলের দরজা খোলে না। যেখানে মায়াঙ্ক আগরওয়াল ৯৯০ রান করেও সুযোগ পেলেন না।
তার মানে কী দাঁড়াল? সাধারণ যুক্তিবোধ দিয়ে ঋদ্ধিমান সাহাকে সুযোগ না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না। জাতীয় নির্বাচকদের মাথায় ‘স্পেশাল’ কোনও চিন্তাভাবনা আছে নিশ্চয়ই। যেমন রাহুলের সঙ্গে তাঁদের বহুদিনের ‘লাভ অ্যাফেয়ার’। আর কে না জানে, এভরিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ অ্যান্ড ওয়ার।